রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে শেষ বলে ১ রানে জিতল কলকাতা

১৪ বছরের বিস্ময় কিশোর ইডেনে খেলবেন। তাতেই তেতে ছিল কলকাতা। হয়তো আরও একটা বিস্ময় ইনিংস দেখা যাবে তাঁর ব্যাট থেকে। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে মাত্র ৪ রানেই আউট বৈভব সূর্যবংশী। ততক্ষণে অবশ্য আনন্দের রসদ পাওয়া হয়ে গেছে রবিবারের ইডেনের দর্শকদের। ৩৭ পেরিয়ে যাওয়া দ্রে রাসের তাণ্ডব, বছর ২০ বয়সী রঘুবংশীর লড়াইয়ে ২০৬ রানের বিশাল ইনিংস দেখা হয়ে গেছে সকলের। সূর্যবংশীর আউটের পর বাকি রুদ্ধশ্বাসটুকুও দেখে নিল দর্শকরা। একবার মনে হচ্ছিল রাজস্থান রয়্যালস জিতবে, তো পর মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল জিতবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হাসল কলকাতাই। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার গড়ানো যে ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ১ রানে জিতে প্লে-অফ খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল কলকাতা।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারের শেষে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২০৬ রান তোলে কেকেআর। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানে থামে রাজস্থান রয়্যালস। এই জয়ে ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট কেকেআরের। জিততে শেষ ওভারে ২২ রান দরকার ছিল রাজস্থানের। ইডেন গার্ডেনে শুভম দুবে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন দলকে। বৈভব অরোরার করা ওভারের প্রথম দুই বলে জোফ্রা আর্চার ডাবল ও সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন দুবেকে। পরের তিন বলে ছক্কা-চার-ছক্কায় ১৬ রান তুলে হিসাবটাকে ৩ রানে নামিয়ে আনেন দুবে। ওই বলে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান আর্চার। হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়ে রাজস্থান রয়্যালস।

নাইটদের ২০৬ রানের ৮৫-ই এসেছে শেষ ৫ ওভারে, শেষ ৩ ওভারে ৫৭ রান। আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিংয়ের তাণ্ডবে রাজস্থানের বোলাররা খেই হারিয়েছিলেন। প্রথম ৯ বলে ২ রান করা রাসেল পরের ১৬ বলে করেছেন ৫৫ রান। ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে অঙ্কৃশ রঘুবংশীকে নিয়ে রাসেল ২৫ বলে ৫৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এবারের আইপিএলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডারের এটাই প্রথম অর্ধশতরান। ইনিংসে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা মেরেছেন রাসেল। রিঙ্কু ১ চার ও ২ ছক্কায় ৬ বলে করেছেন ১৯ রান। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে চতুর্থ বলেই বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশীকে হারায় রাজস্থান। এরপর দ্বিতীয় ওভারে হারায় ক্রুনাল সিং রাঠোরকে। এরপর রিয়ান পরাগকে নিয়ে যশস্বী জয়সওয়ালের ৩১ বলে ৫৮ রানের জুটি লড়াইয়ে ফেরায়। যশস্বী (২১ বলে ৩৪) ফেরার পর ৫ রানের মধ্যে বরুণ চক্রবর্তী ফিরিয়ে দেন ধ্রুব জুরেল ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। এরপর রাজস্থান অধিনায়ক পরাগ শিমরান হেটমায়ারকে নিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন দলকে। ১৩ ও ১৪তম ওভার মিলিয়ে টানা ছয়টি বৈধ বলে ছক্কা মেরে ইডেনের দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন পরাগ। তবে ১৬তম ওভারে হেটমায়ারের বিদায়ের পর জয় ও সেঞ্চুরির ‘ডবল’ চাপ নিতে পারেননি পরাগ। টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে ফেরেন রাজস্থান অধিনায়ক। ৪৫ বলে ৯৫ রান করার পথে ৬টি চার ও ৮টি ছক্কা মারা পরাগের বিদায়ের পর মনে হচ্ছিল এখন শুধু ব্যবধানই কমাতে খেলবে রাজস্থান। কিন্তু ইমপ্যাক্ট হিসেবে নামা শুভম দুবে ফের ম্যাচের রঙ পাল্টে দেওয়ার মত খেলতে শুরু করেন। ১৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস। তবে শেষ পর্যন্ত জয়টা অধরাই থাকল রাজস্থানের। স্বস্তি পেলেন রাহানে।