স্কুবা ডাইভিংয়ে গিয়ে দুর্ঘটনা! অকালে প্রাণ হারালেন জুবিন গর্গ, থামল অবিস্মরণীয় কণ্ঠস্বর
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: অসমের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী, ‘য়া আলী’ খ্যাত জ়ুবিন গর্গ আর নেই। সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ হঠাৎই ঘটে বিপদ। জলের নিচে আচমকা শ্বাসকষ্ট শুরু হয় গায়কের। তড়িঘড়ি তাঁকে সিঙ্গাপুর পুলিশ উদ্ধার করে, নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন, আইসিইউ-তে রাখা হলেও সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। চিকিৎসকেরা জানান, আঘাত ও শ্বাসকষ্টের জেরে তাঁর মৃত্যু হয়। যে মানুষটা তাঁর গানে কোটি কোটি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন, তাঁকে এভাবে চোখের সামনে হারিয়ে যেতে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেল গোটা বিনোদন জগত।
জ়ুবিনের উপস্থিতিই ছিল সিঙ্গাপুরের নর্থইস্ট ফেস্টিভ্যালের বড় আকর্ষণ। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাজারো অনুরাগী অপেক্ষা করছিলেন তাঁর সুরের মঞ্চে ওঠার জন্য। কিন্তু নির্ধারিত গান-আসরের বদলে নেমে এল নিস্তব্ধতা। উৎসব রূপ নিল অপ্রত্যাশিত ট্র্যাজেডিতে।
হঠাৎ মৃত্যুতে শোকের ছায়া শুধু অসম নয়, ছড়িয়েছে গোটা দেশের সংগীতমহলে। শোক প্রকাশ করেছেন সঙ্গীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় থেকে অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়— সকলে। খবর পেয়েই সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন গায়কের স্ত্রী।
জুবিন গর্গের এই আকস্মিক প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এক্স (টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, ‘শব্দ আজি নিজেই নিজত আবদ্ধ। অসম আজ তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্রদের একজনকে হারাল। জ়ুবিন অসমের জন্য কী ছিলেন, তা বোঝানোর মতো ভাষা নেই। তিনি খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন, এটা তাঁর চলে যাওয়ার বয়স ছিল না। জুবিনের কণ্ঠের মধ্যে মানুষকে উদ্দীপ্ত করার এক অসামান্য ক্ষমতা ছিল এবং তাঁর সঙ্গীত সরাসরি আমাদের মন ও আত্মাকে স্পর্শ করত। তিনি এমন এক শূন্যতা তৈরি করে গেলেন, যা কখনও পূরণ হবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁকে অসমের সংস্কৃতির একজন স্তম্ভ হিসেবে স্মরণ করবে এবং তাঁর কাজ আগামী দিনে আরও অনেক প্রতিভাবান শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করবে। সঙ্গীতের বাইরেও, মানুষের সঙ্গে তাঁর সংযোগ এবং তাদের সাহায্য করার জন্য তাঁর যে আবেগ ছিল, তা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো আমি খুব উপভোগ করতাম। সেই জাদুকরী কণ্ঠ চিরতরে নীরব হয়ে গেল। যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, এতটাই মর্মান্তিক। জুবিনের প্রয়াণে আমি আমার সহ-নাগরিকদের সাথে শোকাহত। শান্তিতে থেকো, জুবিন! তুমি চিরকাল অসমের প্রিয় রকস্টার হয়ে থাকবে।’
