শচীনের ৫২ বসন্ত, বিশ্ব ক্রিকেটের এক জীবন্ত কিংবদন্তি

ক্রিকেট বিশ্বের কাছে ২৪ এপ্রিল দিনটি অন্যরকম।তার কারণও আছে। স্ত্রী জেসি মার্থা মেঞ্জিসকে ডেকে যার ব্যাটিং দেখতে বলেছিলেন স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান, সেই ছেলেই যে এই দিনে ৫২ পেরিয়ে পা দিলেন ৫৩-তে। তিনি আর কেউ নন, ‘ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটার’ শচীন তেন্ডুলকর। সেই শচীন, যিনি ১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন এমন এক পরিবারে, যেখানে ছিল সাহিত্য চর্চার বীজ। বাবা রমেশ তেন্ডুলকর মারাঠি ভাষার কবি ও সাহিত্যিক, পেশায় কলেজ শিক্ষক। তার জীবনটা অন্য পথে বাঁক নেয়।প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তারই বোন রজনীকে ঘরে আনেন রমেশ। নিতিন, অজিত ও সবিতা—বোনের এই তিন সন্তানকে নিয়ে শুরু হয় রজনীর নতুন সংসার। তিনের সাথে যোগ হয় নতুন এক অতিথি। ঠিক এই দিনেই, দুপুর একটার সময় মুম্বইয়ের শিবাজী পার্কের রানাডে রোডের নির্মল নার্সিং হোমে জন্ম হয় ফুটফুটে সন্তানের। ওজন ২ কেজি ৮৫ গ্রাম। পরিবারের সেই আদরের সন্তানের নাম রাখা হয় শচীন। তারও কারণ আছে। শচীন দেব বর্মনের ভক্ত ছিলেন তার বাবা রমেশ তেন্ডুলকর। তাইতো ছেলের নাম রাখেন শচীন।

তবে গানের জগতে নয়, সুর-ছন্দ-লয় সবকিছুই যেন ২২ গজে ব্যাট হাতে মাতিয়ে দেন শচীন।ক্রিকেট যতদিন থাকবে, এই নামটাও যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকবে। কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের নামের পাশে কত শত যে রেকর্ডের পসরা সাজানো আছে সেটার যেন শেষ নেই। নামের পাশে যোগ করেছেন নানা খেতাব-উপাধি। তিনিই যে রূপান্তরিত হয়েছেন ক্রিকেট ঈশ্বর নামে। শচীনের ক্রিকেটজীবন শুরু হয় মাত্র ১১ বছর বয়সে মুম্বইয়ের হয়ে খেলতে নামার মধ্য দিয়ে। কিন্তু তার আসল লড়াই শুরু হয় ১৬ বছর বয়সে, যখন তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের হয়ে অভিষেক করেন। এরপর দীর্ঘ ২৪ বছর দেশের জার্সিতে মাঠ কাঁপিয়েছেন এই কিংবদন্তি। তার ঝুলিতে আছে ৬৬৪ আন্তর্জাতিক ম্যাচ, ৩৪৩৫৭ আন্তর্জাতিক রান, ২০১ আন্তর্জাতিক উইকেট, ২০১১ বিশ্বকাপ জয়, ১০০ আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। তবে ২০১১ সালে, ২২ বছরের প্রতীক্ষার পর ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্ত ছিল শচীনের কেরিয়ারের শ্রেষ্ঠ অধ্যায় ও মুহূর্ত। সেই কিংবদন্তি শচীনের জন্মদিনে ভক্তরা যেমন শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তেমনই সমাজ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে সারা তেন্ডুলকর। বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ থেকে শুরু করে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার, সুরেশ রায়না এবং যুবরাজ সিং, যারা শচীনের অধীনে তাদের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, তারাও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।