গৃহকর্ম সহায়িকার নির্যাতনের অভিযোগে বিদ্ধ পরীমণি, ‘দুঃসময়ে’ পাশে তসলিমা নাসরিন
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: ফের বিতর্কের কেন্দ্রে পরীমণি। তাঁর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন তাঁর এক গৃহকর্ম সহায়িকা। শিশুকন্যাকে খাওয়ানো নিয়ে বচসাকে ঘিরেই নাকি তাঁর গায়ে হাত তোলেন দুই বাংলার এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। আইনি জটিলতায় বিদ্ধ তো বটেই, সমাজমাধ্যম ঘিরে পরীকে নিয়ে যখন বিরূপ মন্তব্যের ছড়াছড়ি, ঠিক এমন সময়তেই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়ালেন তসলিমা নাসরিন। লিখলেন, ‘পরীমণির সুসময়ে না থাকলেও তিনি দুঃসময়ে পাশে থাকি।’
সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আবার ওঁর (পরীমণি) আঙিনায় দুঃসময় এসে দাঁড়িয়েছে। এক মহিলা, গৃহপরিচারিকা চাকরি নিয়ে ওঁর বাড়িতে ঢুকেছিল। কিছু দিন পর সে বেরিয়ে এসে পরী মণির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছে। আর মিডিয়াও বেশ ফলাও করে মহিলার সাক্ষাৎকার ছাপাচ্ছে, যেন মহিলা যা বলছে সবই সত্যি।’ এই প্রসঙ্গে তিনি আঙুল তুলেছেন বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের দিকেও। পুরুষতন্ত্রকে এক হাত নিয়ে তিনি লেখেন, ‘মিডিয়ার চরিত্র আমরা জানি। নারী, বিশেষ করে সে নারী যদি ব্যতিক্রমী, সাহসী, প্রতিভাময়ী হয়, তাহলে তাঁর সর্বনাশ না করে ছাড়বে না মিডিয়া। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো, রক্ষণশীলতা আঁকড়ে রাখা, ক্ষমতার চাটুকারিতা বাংলাদেশের মিডিয়ার বিশেষ দোষ। মিডিয়া তো রক্ষণশীল পুরুষতান্ত্রিক লোকদেরই তৈরি। এ আর নারীবিদ্বেষী সমাজ থেকে আলাদা কী হবে! পরীমণিকে আক্রমণ করার জন্য, তাঁর চরিত্রে কালি লেপনের জন্য মহিলাটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবহৃত হয়ে যাওয়ার পর মহিলাকে কিন্তু মিডিয়াও ছুঁড়ে ফেলে দেবে আস্তাকুঁড়ে।’
এমনকি, অভিযোগকারিণীর বক্তব্যকে মিথ্যে বলেও অনুমান তসলিমার। তিনি লিখেছেন, “গৃহপরিচারিকার চাকরি করতে আসা মহিলাটি যে মিথ্যে কথা বলছে তা সহজেই অনুমেয়। তার বর্ণিত চড় খেয়ে মূর্চ্ছা যাওয়ার ঘটনাটি যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি করে। পরী মণির বিরুদ্ধে সে যে নোংরা ভাষায় কথা বলেছে, তাতে মনে হয় সে বদ একটি উদ্দেশ্য নিয়ে পরী মণিকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে, এবং এই ষড়যন্ত্রে তাকে অনেকেই সাহায্য করছে।’
এই ঘটনার পর প্রচুর ব্যক্তিগত আক্রমণও ধেয়ে এসেছে অভিনেত্রীর দিকে। খোদ মন্তব্য ছুড়েছেন সেই গৃহকর্ম সহায়িকাও। সেই প্রসঙ্গে তলসিমার বক্তব্য, ‘পরী মণির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তার জঘন্য মন্তব্য সব রকম সীমা অতিক্রম করেছে। পরী মণি কার সঙ্গে কথা বলবে, খাবে, ঘুরবে, বেড়াবে, শোবে, তা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। আদালতের উচিত নয় নারীবিদ্বেষী ষড়যন্ত্রের মামলাকে গ্রহণ করা বা আদপেই তার মূল্য দেওয়া। এই সত্যটা সবারই জানা উচিত, গরিব হলেই মানুষ সৎ হয় না। গরিবরাও অসৎ, ধুরন্ধর, বদমাশ, মিথ্যুক, নিষ্ঠুর, চোর, ডাকাত, ধর্ষক, খুনি হতে পারে।’