ট্রেনে যাত্রীদের ‘গালিগালাজ’ ‘মা’ ধারাবাহিকের ‘ঝিলিকের’, বিতর্ক বাড়তেই পাল্টা জবাব তিথি বসুর

0

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক একটি ঘটনাকে ঘিরে বিতর্কের কেন্দ্রে জনপ্রিয় ‘মা’ ধারাবাহিকের ‘ঝিলিক’ ওরফে তিথি বসু। সিমলা ঘুরতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই ওই ট্রেনে অন্যান্য সহযাত্রীকে বিরক্ত করা এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।

ট্রেনে তিথির কামড়ায় থাকা এক সহযাত্রী তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করে স্যোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘এই মুহুর্তে আমি নেতাজি এক্সপ্রেসে রয়েছি। আমাদের কামড়ায় সহযাত্রী হিসেবে রয়েছেন শিশু, বৃদ্ধ, মহিলা এবং একদল তরুণ-তরুণী। তাঁদের মধ্যে ব্লগারও রয়েছেন। কিন্তু এই ব্লগাররা জানে না যে, তাঁদের পাবলিক প্লেসে উল্লাস করার অধিকার আছে কি না। উঁচু আওয়াজে চিৎকার, গান আর হট্টগোলের মাঝে তাঁরা তাঁদের আশপাশে থাকা অন্যান্য যাত্রীর কথা ভাবছেনই না। তাঁদের এই আচরণে সত্যি আমি স্তম্ভিত। বারবার অনুরোধ করার পরও তাঁরা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। জোরে জোরে গান চালাচ্ছেন। এই নিয়ে বলতে গেলে তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেছেন। আমি জানি না এটা কীভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।’ এখানেই শেষ নয়, অভিনেত্রীর একটি ছবি পোস্ট করে সেই যাত্রী লেখেন, ‘এই মেয়েটিকে দেখছেন, এই মেয়েটি সবচেয়ে বাজে ভাষা ব্যবহার করেছিল।’

এমন পোস্ট চোখ এড়িয়ে যায়নি অভিনেত্রীরও। ভাইরাল পোস্টটিকে ঘিরে তিথি উত্তর দিয়েছেন ওই ট্রেনে বসেই। একটি ভিডিয়োবার্তায় খোলসা করেন সবটাই। তিনি বলেন, “আমি নেতাজি এক্সপ্রেসেই আছি। এখন রাত দু’টো বাজে। আমার ছবি নিয়ে একটা পোস্ট খুব ভাইরাল হয়েছে দেখলাম। পোস্টে ব্যবহার করা ছবিতে আমি আধো আধো মুখ করে একজনের দিকে তাকিয়েছিলাম। সেই ছবিটা দিয়ে লেখা হয়েছে আমি নাকি যাত্রীদের বিরক্ত করেছি, গালিগালাজ করেছি। পোস্টটা খুব ভাইরালও হয়েছে। ঠিকাছে, আমার ছবি দিয়ে যদি কেউ ভাইরাল হতে চান, তবে হোন। কিন্তু আমি তো জানতাম লোকজন শিক্ষিত। কিন্তু আজ বুঝলাম যে মানুষজন দু’পক্ষের কথা না শুনেই নানা মন্তব্য করতে শুরু করে দেন। কোনও পরিচিত মুখ দেখেছে আর তাঁকে নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করে দিয়েছে। তার মধ্যে আমার গায়ে ‘ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির মেয়ে’ তকমা লেগে গিয়েছে মানেই আমি খারাপ।”

পাশাপাশি জোরে জোরে গান চালানো এবং অকথ্য ভাষা ব্যবহার করার প্রসঙ্গকে ঘিরেও তিনি বলেন, “আমরা গান চালিয়েছিলাম দুপুরের দিকে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে কেউ গান চালাইনি। তাও আমাদেরকে গানের আওয়াজ কমিয়ে দিতে বলায় আমরা অনেক সম্মানের সঙ্গে তাঁদের কথা শুনেছিলাম। কিন্তু মজার বিষয় হল, যাঁরা এসে বলেছিলেন গান কমিয়ে দেওয়ার কথা, তাঁরা কিন্তু পোস্টটা করেননি। যাঁরা লেখালিখি করেছেন, তাঁরা ওই মুহূর্তে ছিলেনও না এই দৃশ্যে। দুপুর সাড়ে ৩টের পর আমরা গান বন্ধ করে দিই।” তিনি আরও বলেন, “তারপর বিকেলে আমাদের কামড়ায় যাঁরা ছিলেন তাঁরা আমাদের সঙ্গে হইহই করছিলেন। সিমলা ঘুরতে যাওয়া হচ্ছে বলে সকলে একসঙ্গে মজা করছিলাম। কিন্তু তখনও এসে এক মহিলা বলেন, গান কেন চলছে? তখন আমারা বলি যে আমরা গান বন্ধ করব না, কিন্তু আওয়াজ কমিয়ে দিতে পারি। আর তখন তাঁদের সঙ্গে খুব ভদ্র ভাবেই কথা বলেছি। তারপর তিনি আরপিএফকে অভিযোগ জানান, আমাদের গান বন্ধ করিয়ে দেন। আমরা বন্ধও করে দিই। তারপর আমরা মজা ঠাট্টা করেছি। আমাদের সঙ্গে একজন বয়স্ক মানুষ বসেছিলেন। তিনিও আমাদের সঙ্গে মজা করছিলেন। অন্যান্য কামড়া থেকেও অনেকে আসছিলেন আমাদের সঙ্গে ছবি তুলতে, মজা করতে। কিন্তু যাঁরা পোস্টটা করেছেন, তাঁরা কোনও প্রতিবাদই করেননি। শুধু হঠাৎ করে পোস্ট করে দিয়েছেন।”

সত্যিই কি গালিগালাজ করেছিলেন তিথি বসু? তিনি বলেন, “আমি একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলছি। এখানে আরও অনেকেই ছিলেন। একটা ঝামেলা হয়েছিল। সেই ঝামেলায় আমিও জড়িয়ে পড়েছিলাম। আমিও একজন মানুষ। আমি কেবল পরিচিত মুখ বলে কোথাও অন্যায় দেখে প্রতিবাদ করব না, তা হতে পারে না। যাঁরা পোস্টটা করেছেন, তাঁরাই বরং আমাদের খুব খারাপভাবে অপমান করছিলেন। আমরা ভাল করে কথা বললেও তাঁরা পাত্তা দেননি। তারপর আমরাও ওঁদের মতো করেই কথা বলেছি। আমি মনে করি সম্মান তাঁকেই দেওয়া যায়, যে সম্মান পাওয়ার যোগ্য।”

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *