বাবা অটোচালক, সুযোগ হয়নি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার, মুম্বই ম্যাচে চর্চায় ভিগনেশ পুথুর

আগে কখনও সিনিয়র স্তরের ক্রিকেট প্রতিযোগিতাতেই তাঁকে খেলা দেখা যায়নি। দুঃসাহসটা দেখাল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সই। আইপিএলের ‘এল ক্লাসিকো’ নামে খ্যাত চেন্নাই – মুম্বই ম্যাচেই নীল জার্সিতে খেলতে নামলেন ভিগনেশ পুথুর। সেটাও রোহিত শর্মার বদলে। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে মাঠে নামেন তিনি। আর মুম্বইয়ের হয়ে অভিষেক ম্যাচ হারলেও তিন উইকেট নিয়ে চর্চায় কেরলের ‘চায়নাম্যান’ বোলারের ভেলকি। চেন্নাই সুপার কিংস জেতার পর ভিগনেশের কাঁধে হাত রেখে কথা বলতে দেখা যায় মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও।
তাঁকে নিয়ে চর্চা হওয়ার কারণ আছে যথেষ্ঠ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অনভিজ্ঞ হলেও, পুথুর একজন চায়নাম্যান বোলার।এত বড় মঞ্চে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে স্নায়ুচাপে ভেঙে পড়েছেন এমন উদারণ থাকলেও, পুথুর ব্যতিক্রম। আর সবচেয়ে ব্যতিক্রম, তাঁর জীবন সংগ্রাম। ভিগনেশের জন্ম ২০০১ সালের ২ মার্চ ভারতের কেরালা রাজ্যের মালাপ্পুরম জেলায়। বাবা সুনীল কুমার একজন অটোচালক, মা কেপি বিন্দু ঘরোয়া মানুষ। পরিবারে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ দশা। তাই দরিদ্রতাকে সঙ্গী করেই বেড়ে উঠতে হয়েছে ভিগনেশকে। চরম অর্থকষ্টেও খেলার স্বপ্ন দেখতে পরিবারের কেউই বারণ করেননি। উল্টে নিজেদের সাধ্যাতীতই করেছেন পরিবারের লোকজন।

ছেলের অগাধ ভালোবাসা দেখে তাঁকে মালাপ্পুরম ছেড়ে ত্রিশূর শহরে যেতে দেন। ত্রিশূরে গিয়েই নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেন পুথুর। খেলতে থাকেন কলেজ ক্রিকেট। সেখানেই স্পিনার হওয়ার কসরত শুরু। ত্রিশূরের সেন্ট টমাস কলেজ থেকে সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পড়াশুনো যেমন করেছেন, তেমনই চালিয়ে গেছেন খেলা। এরপর কেরল লিগে প্রথম আত্মপ্রকাশ ও নজরে আসার শুরু। খেলেছেন তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগেও। রাজ্য পর্যায়ে খেলেছেন কেরালা অনূর্ধ্ব-২৩ দলে। এরপর সিনিয়র দলে অভিষেক হওয়ার আগেই নিলামে বেস প্রাইসে মুম্বই কিনে নেয় তাঁকে। আসলে, মুম্বইও যখন তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার খোঁজা শুরু করে তখনই নজরে আসে কেরল লিগে খেলা এই ক্রিকেটারকে। এরপর ট্রায়ালে ডাকে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দক্ষিণ আফ্রিকা ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের নেট বোলার হিসেবে ডাক পায়। সেখানেই রশিদ খানের সঙ্গে পরিচয়। এবার আইপিএলে সুযোগ পেতেই জানিয়ে দিল যেন, আরও অনেক পথ চলার বাকি।