মাত্র ৩টি উপাদান, বাড়িতে বানানো এই পানীয়তে চুমুক দিলেই মুক্তি পাবেন ডজন ডজন রোগ থেকে

0

লাইফস্টাইল: ত্বকের সমস্যায় এবং চুল পড়ার সমস্যায় জেরবার? তাহলে প্রতিদিন সকালে এই পানীয়টি খান, একটা সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্য করবেন বদল। একদম ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানিয়ে নিন এই পানীয়। উপকরণেও নেই বাহুল্য। এই পানীয় বানাতে লাগবে একটি বিটরুট, গাজর এবং একটি আমলকি। সাধারণত ‘এবিসি ডিটক্স ওয়াটার’ বলা হয় এই পানীয়টিকে।

গুণাগুণ

১) বিটরুট একটি প্রাকৃতিক ঔষধ। এটি রক্তনালীগুলিকে প্রশস্ত করতে, রক্তপ্রবাহ উন্নত করতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। গাজর এবং আমলকিতে রয়েছে পটাসিয়াম, যা রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।


২) এই রস একটি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসাবে কাজ করে। লিভার এবং কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। বিটরুটে বিটালাইন রয়েছে, যা লিভারের কার্যকারিতাকে বাড়ায়, অন্যদিকে আমলকিতে আছে শক্তিশালী ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য।


৩) আমলকি চুলের ফলিকলকে পুষ্ট করে, অকালে ধূসর হওয়া এবং চুল পড়া রোধ করে। বিট এবং গাজর আয়রন এবং বায়োটিনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। চুলের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।


৪) এই তিনটি উপাদানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ভাল কোলেস্টেলের মাত্রা বাড়ায়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।


৫) কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ এই পানীয় আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পরিপূর্ণ রাখে, অপ্রয়োজনীয় খিদে কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।


৬) গাজর উচ্চ বিটা-ক্যারোটিন সামগ্রীর জন্য পরিচিত, যা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত করে। এর ফলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়। বিটরুট এবং আমলকি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে।


৭) বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়াতে এবং রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমলকি আয়রন শোষণ বাড়ায়, যাদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম, তাদের জন্য খুব উপকারী ডিটক্স ওয়াটার।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

১) বিটরুট কিডনিতে পাথর গঠনের কারণ হতে পারে। এটি প্রস্রাবের অক্সালেট নিঃসরণ বাড়ায়, যা ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথরের বিকাশ ঘটাতে পারে। চিকিৎসকেরা তাই পরিমিত পরিমাণে বিটরুটের রস পান করার পরামর্শ দেন। উপরন্তু, আপনার যদি কিডনিতে পাথর থাকে, তবে বিটের রস সম্পূর্ণরূপে এড়ানো উচিত।


২) অ্যানাফিল্যাক্সিস হল একটি অ্যালার্জেনের তীব্র অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া, যার প্রতি শরীর অতিসংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, বিটরুটের অত্যধিক সেবনের কারণে কারও কারও অ্যালার্জি শুরু হতে পারে। এর ফলে গলা ব্যথা হতে পারে এবং বুকে কফ জমা এবং ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।


৩) বিটরুট বা লাল রঙের খাবারের অত্যধিক ব্যবহারের কারণে, মানুষের মধ্যে বিটুরিয়া রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বিটুরিয়া হল বিটরুটের রস বেশি খাওয়ার কারণে প্রস্রাব বা, মল লাল হয়ে যাওয়ার অবস্থা।


৪) বিটরুটে নাইট্রেট থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে। তাই অত্যধিক মাত্রায় এই পানীয় না পান করাই শ্রেয়।


৫)অত্যধিক নাইট্রেট শরীরে গেলে গর্ভবতী মহিলারা শক্তির অভাব, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং চোখ, মুখ, ঠোঁট, হাত এবং পায়ের চারপাশে নীল-ধূসর ত্বক অনুভব করতে পারেন।


৬) খুব বেশি পরিমাণে বিটরুট খেলে লিভারে আয়রন জমা হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে লিভারের ক্ষতি করতে পারে।


৭) অত্যাধিক মাত্রায় বিটরুট শরীরে প্রবেশ করলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ঘটে। বিটরুট নাকি শরীরের ক্যালসিয়াম গ্রাস করে। যাঁদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে, তাঁদের বিটরুট এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *