‘নির্বানা’, ‘কোল্ড প্লে’র সঙ্গে জুড়ে আছে তাঁর নাম, সেই মিতি অধিকারীকেই ভুলে গেল নিজের শহর!
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: কলকাতার মিতি অধিকারী। কিন্তু জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছিলেন আন্তর্জাতিক দরবারেও। বিবিসির এই কিংবদন্তি সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার সঙ্গীতের জগতে রাজত্ব করেছেন প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। এক সময়ে ব্রিটিশ রক এবং ভারতীয় ইন্ডি সঙ্গীতের জগতের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছিলেন যিনি, আজ তিনি নেই, তা ভেবেই চোখ ভিজেছে তাবড় তাবড় সঙ্গীতশিল্পীদের। সমাজমাধ্যমে রূপম ইসলাম লিখেছিলেন, ‘এভাবেই তুমি থেকে যাবে মিতিদা…’
কিন্তু বাংলার বুকে সত্যিই কি তিনি থেকে যেতে পারলেন? কিংবদন্তিকে কি আদৌ মনে রেখেছে নিজের শহর কলকাতা? গত রবিবার, ৮ জুন, প্রয়াত হয়েছেন এই প্রখ্যাত সঙ্গীত প্রযোজক এবং সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। সেই সময় গোয়াতে ছিলেন তিনি। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মিতি অধিকারী।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে কলকাতায় জন্ম তাঁর। সঙ্গীতের সঙ্গে তাঁর পরিচিতি ঘটে ১৯৭০-এর দশকের রক সঙ্গীতের মাধ্যমে। ‘নির্বানা’, ‘রেডিওহেড’, ‘পিঙ্ক ফ্লয়েড’, ‘ফু ফাইটার্স’-এর মতো একাধিক আইকনিক ব্যান্ডের সঙ্গে যাঁর নাম জড়িয়ে রয়েছে, সেই ‘সিলভার ফক্স’-এর প্রয়াণেই চুপ অধিকাংশ ‘সঙ্গীতপ্রেমী’রা। সর্বসমক্ষেই এই প্রসঙ্গে হতাশা প্রকাশ করেছেন তাঁর অনুরাগীদের একাংশ।
কলকাতাতেই জন্ম এবং কলকাতার বুকেই বেড়ে ওঠা মিতি অধিকারীর। যেখানে শহরের একটি ব্যান্ডের জন্য বেস গিটার বাজাতেন তিনি। ‘বিবিসি রেডিও’র অধীনে জনপ্রিয় ‘মাইদা ভেল’ স্টুডিওতে তাঁর কাজ সর্বাধিক পরিচিতি পেয়েছিল। প্রায় ৩৪ বছর ধরে চিফ সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারের পদে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। অনুরাগীরা আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘কোল্ড প্লে কনসার্টের টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মানুষেরা চেনেনই না এই কিংবদন্তিকে’।
বাংলায় বরাবরই অবহেলিত হয়েছে রক সঙ্গীত। এই সঙ্গীতধারারই এমন একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির প্রয়াণে কেন ‘নীরব’ নেটিজেনরা? প্রশ্ন তুলছেন তাদেরই একাংশ। তাঁরা যদি মিতি অধিকারীকে চিনতেন, তা হলে জানতেন বাংলার বুকেই জন্মানো এই প্রতিভা বিশ্বের দরবারে চিনিয়েছেন বাংলাকে। অথচ কাজ করে গিয়েছেন নীরবে।