কী ভাবে খুন রাজা রঘুবংশীকে! সোনম ধরা পড়তেই রহস্যের পর্দাফাঁস! জালে প্রেমিকও

বিশ্বাস করাটাই কঠিন! গোটা ভারতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে সোনম রঘুবংশীর কু-কীর্তি! এ তো হাসিমুখে খুন! সদ্য বিবাহের পর শিলং-এ মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হন সোনমের স্বামী রাজা রঘুবংশী।এরপরই রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান স্ত্রী সোনম। এবার ধরা পড়েছেন স্ত্রী। আর তাতেই পরতে পরতে রহস্যের জট খুলছে। খুনের তদন্তে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে সোনমকে গ্রেফতার করার পর পুলিশের সন্দেহ, নববধূ একা নন, রাজা রঘুবংশীর খুনের পিছনে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের এক বাসিন্দাও। পুলিশের দাবি, বিয়ের আগের সম্পর্কের কারণে এই খুনের ছক কষেন সোনম। তাকেই এখনও পর্যন্ত এই খুনের মূল চক্রান্তকারী হিসেবে মনে করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রীতিমতো ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে সদ্যবিবাহিত স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে সোনম। রবিবার গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের নন্দগঞ্জে পৌঁছে দাদাকে ফোন করেন সোনম। স্থানীয়দের দাবি, চোখে মুখে ছিল বিধ্বস্ত হওয়ার ছাপ ছিল সোনমের। ঘটনা জানাজানি হতেই কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। সোনমকে গ্রেফতারের পর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর মেঘালয়ের পুলিশ দল গাজিপুরে পৌঁছলে তাদের হাতে তুলে দেয় সেখানকার পুলিশ। এদিকে মৃতদেহ উদ্ধারের প্রায় সাতদিন পর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এনেছেন তদন্তকারীরা। তাতে জানা গিয়েছে, রাজা রঘুবংশীর মাথায় ছিল ২টি গভীর ক্ষত। সামনে থেকে ও পিছন থেকে দু’বার ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। সোনম গ্রেফতার হওয়ার পরেই মুখ খুলেছেন রাজা রঘুবংশীর মা। রাজা রঘুবংশীর মা উমা রাজবংশী জানিয়েছেন, সোনম ট্রিপের জন্য টিকিট বুক করেছিল। করা হয়েছিল হোটেল বুকিংও। কিন্তু ফেরার টিকিট বুকিং ছিল না। সোনম রাজাকে নাকি বাধ্য করেছিল সোনার অলঙ্কার পরে যেতে। রাজার মায়ের দাবি, ছেলের ডায়মন্ডের আংটি, গলার হার, ব্রেসলেট সহ প্রায় ১০ লাখ টাকার সোনার অলঙ্কার ছিল। সোনমই নাকি জোর করেছিল এসব পরে যেতে। রাজার মা জানিয়েছেন, যদি সোনম এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে তার ফাঁসি হওয়া দরকার।
উল্লেখ্য, ১১ মে রাজা ও সোনম গাঁটছড়া বাঁধেন। এরপর মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে যান। ২৩ মে থেকে নবদম্পতির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হানিমুনে ঘুরতে গিয়ে কোনও বিপদে পড়েছেন দম্পতি। কিন্তু ২ জুন গিরিখাতে রাজার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানেই পুলিশকে গাইড জানায়, ২৩ মে রাজা ও সোনমকে লংরিয়াট গ্রামে ‘ডবল ডেকার ব্রিজ’ হাইকিংয়ে যেতে দেখেছিলেন । সেখানে তাঁদের সঙ্গে আরও তিনজন ব্যক্তির উপস্থিতির কথাও জানান তিনি পুলিশকে। তখনই পুলিশ অনুমান করে, পরিকল্পনামাফিক এই খুন। সোনমের কিছুই হয়নি। গা ঢাকা দিয়েছে। হাড়হিম করা, নৃশংস এই খুনের ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে সোনমের প্রেমিক-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।