তিনিই প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার! রিচার বিশ্বজয়ে উত্তরবঙ্গে আনন্দের জোয়ার

তিনিই একমাত্র বাঙালি ক্রিকেটার। শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা ঘোষ বিশ্বজয়ের অন্যতম কাণ্ডারি। শিলিগুড়ির মেয়ের হাত ধরে বাঙালি প্রথম বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেল। স্বাভাবিকভাবেই মুম্বইয়ে মধ্যরাতে উৎসবের রেশ দেখা গেল উত্তরবঙ্গেও। শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভারতের পতাকা হাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। ভারতের জয়জয়কার আর রিচার প্রশংসা সকালের মুখে শোনা যায়। যদিও সেই উৎসবে রিচার পরিবার ছিল না। কারণ, বাবা-মা দু’জনেই খেলা দেখতে গিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। কিন্তু তাতে কিচ্ছু যায় আসে না শিলিগুড়ির রিচার পাড়া সুভাষপল্লির নেতাজী মোড়ের বাসিন্দাদের। জয়ের পরই চলে মিষ্টি মুখ।
ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রিচা ২৪ বলে ৩৪ রান করেন। ৩ বাউন্ডারি এবং দু’টি ছক্কা হাঁকান তিনি। পরে উইকেটের পিছনে একটি ভাল ক্যাচও ধরেন দলের উইকেটরক্ষক।রিচার এটাই প্রথম বিশ্বকাপ। এই প্রতিযোগিতায় ৮ ইনিংসে মোট ২৩৫ রান করেছেন তিনি। লিগ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই এসেছিল তাঁর সেরা ইনিংস। আট নম্বরে নেমে ৭৭ বলে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেন রিচা। তাঁর ১১ চার ও ৪ ছক্কার এই ইনিংস বহু দিন মনে থেকে যাবে ক্রিকেটপ্রেমীদের। যদিও সেই ম্যাচটি ভারত জিততে পারেনি। সেই আক্ষেপ ফাইনালে মিটিয়েছেন রিচা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েই শেষ হাসি হেসেছে হরমনপ্রীত বাহিনী।
রিচার এই সাফল্যে খুশি শিলিগুড়ির পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাও।এই জেলার গঙ্গারামপুরের বেলবাড়িতে তাঁর মামার বাড়ি। আদরের দাদুরানির ( মামা বাড়িতে রিচার ডাক নাম)খেলা দেখতে জড়ো হয়েছিল মামার বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি পাড়া পড়শিরা। বিশ্বকাপ জিতে আহ্লাদে আটখানা রিচা। ম্যাচ শেষে চোখে জল বাংলার এই বীর কন্যার। তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম কবে ট্রফি হাতে পাব, অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ। ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না’। এর আগে বিশ্বকাপ জয়ের দোরগোড়ায় এসে ব্য়র্থ হয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে অজিবাহিনীর হাতে পরাজিত হয় টিম ইন্ডিয়া। পরবর্তীতে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের কিংবদন্তি , চাকদা এক্সপ্রেস ঝুলন গোস্বামীও খুব কাছে পৌঁছালেও কাপ ছুঁতে পারেননি। রিচা পারলেন। প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার হিসাবে বিশ্বকাপ উঠল তাঁর হাতে।
