‘সৌমিত্রদা বলেছিলেন, সত্যজিৎ রায়ের পরে যদি কোনও বাঙালি থাকেন, তিনি উৎপল দত্ত’: শঙ্কর চক্রবর্তী
শ্রেয়া ঘোষ: ক্যালেন্ডার বলছে আজ, ২৯ মার্চ তাঁর গুরুদেবের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে পা দিতেন ৯৬তে। প্রতিবারই নিজের গুরুর জন্মদিনে আবেগে ভাসেন অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তী। এক সময়ে তিনি ছিলেন প্রবাদপ্রতিম উৎপল দত্ত-র নাট্যগোষ্ঠীর একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে উৎপল দত্তকে নিয়েই। একাধারে মঞ্চাভিনেতা, পরিচালক এবং প্রাবন্ধিক… কিংবদন্তির জন্মদিনে শঙ্কর চক্রবর্তী সমাজমাধ্যমে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে লেখেন, ‘আমার গুরুর জন্মদিন। প্রণাম নেবেন গুরুদেব।’
এ দিন আডিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় শঙ্কর চক্রবর্তীর সঙ্গে। উৎপল দত্তের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার কেমন? শুটিংয়ের ফাঁকে হাজারও ব্যস্ততার মধ্যেও স্মৃতির কোলাজ ঘেঁটে বললেন, “সেই অভিজ্ঞতা বিরাট! অল্প সময়ের মধ্যে তা বলা কঠিন।” মঞ্চের উৎপল দত্ত না পর্দার, কোন ভূমিকায় আজও মনে পড়ে তাঁকে? তিনি বলেন, “অবশ্যই মঞ্চের উৎপল দত্ত। এত বড় মাপের একজন মঞ্চাভিনেতা, নাট্যকার, পরিচালক, প্রাবন্ধিক- একাধারে এতকিছু। আর পাশ্চাত্য সঙ্গীতের উপর তাঁর যা দখল, তা ভাবা যায় না। সৌমিত্রদা বলেছিলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের পর যদি কোনও বাঙালির নাম করতে হয় শঙ্কর, তা হলে তোমাকে উৎপল দত্তের নাম নিতে হবে।”
প্রথম সাক্ষাতের কথা মনে পড়ে? অভিনেতার সোজাসাপটা জবাব, “আমার ভাষা হারিয়ে গিয়েছিল। তখন আইপিটিএ (ইন্ডিয়ান পিপলস্ থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন)-এ অভিনয় করছি। তৎকালীন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী শোভাদির (শোভা সেন, উৎপল দত্তর স্ত্রী) সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দেন। ‘মহাবিদ্রোহ’ নাটকের সময়ে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমাকে দেখিয়ে শোভাদি, উৎপল দত্তকে বলেন, ‘এই ছেলেটিকে আমাদের সুভাষ পাঠিয়েছে।’ তিনি বলেছিলেন, ‘বাহঃ খুব ভাল, খুব ভাল!”
অভিনেতা জানান, উৎপল দত্তের সঙ্গে তাঁর প্রথম কাজের সুযোগ হয় ‘বণিকের মানদণ্ড’ নাটকের হাত ধরে। যদিও তা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। পরে তাঁরই লেখা এবং নির্দেশনায় ‘কল্লোল’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। সেখানে সূত্রধারের ভূমিকায় ছিলেন অভিনেতা শঙ্কর। পরবর্তীতে ওই একই নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি।