‘এই রায় মানতে পারছি না’, ২৬০০০ চাকরি বাতিল নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ট্রেন্ডিং: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চাকরিহারাদের যখন চোখে জল, তখনই বিশেষ বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে বললেন, “এই রায় মেনে নিতে পারছি না।”
প্রথমেই কোর্টের রায়ের অংশ পড়ে শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। উপসংহার থেকে একটি একটি অংশ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “যাঁরা আগেই চাকরি পেয়েছে, তাঁদের কোনও টাকা দিতে হবে না।” আরও একটি অংশ থেকে বলেন, “যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের আবারও নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।”
সরাসরি বিজেপির দিকে আঙুল তুলে মমতা বলেন, “আত্মরক্ষার তো একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। এতগুলো মানুষের ভবিষ্যৎ কী হবে? শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোলাপ্স করিয়ে দেওয়া কি বিজেপি সরকারের টার্গেট? বাংলাকে আর কত টার্গেট করা হবে?”
“আমি এ বার একটা রাজনৈতিক কথা বলছি। মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম মামলায় কী হয়েছে? ৫০-এর উপর মানুষকে খুন করা হয়েছে? কী শাস্তি হয়েছে অপরাধীদের? আমাদের রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে তো জেলে রেখে দিয়েছে। অনেকদিন হয়ে গেল। সেই নিয়ে তো আমরা কিছু বলিনি। একজনের অপরাধে ক’জনের শাস্তি হয়?”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। “মানসিকভাবে পাশে আছি।” চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন তিনি। বললেন, “বিপদে পড়লে মানুষের মনে আঘাত লাগে। ২৫ হাজার মানে কিন্তু শুধু ২৫ হাজার মানুষের কথা ভাববেন না। এক এক জনের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে কয়েক লাখ মানুষ এখানে জড়িত।” তিনি আরও বলেন, “আমি অবাক হয়ে যাই বিকাশবাবুর কথা ভেবে। তিনি তো বৃহত্তম আইনজীবী। এখনও কেন নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন না আমি জানি না। আমি সুপারিশ করব।”
“এতগুলো মানুষের চাকরি যাওয়ার পর বিজেপির মন্ত্রী সুকান্ত বাবুর মন্তব্য আমি দেখেছি। অযোগ্যদের জন্য নাকি যোগ্যদের চাকরি গিয়েছে। এর জন্য নাকি আমি দায়ী! কেস করার সময় ভাবলেন না কে যোগ্য আর কে অযোগ্য? আপনারা নিজে যোগ্য তো? সবসময় সরকারকে কেন টার্গেট করা হবে? কী দোষ করেছে বাংলার ছেলেমেয়েরা?” বললেন মমতা।
সংবাদমাধ্যমকে মমতার প্রশ্ন, “২৫ হাজার শিক্ষক যদি পড়াতে না পারে তাহলে চিকিৎসক থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করবে কারা? শিক্ষার সুযোগ কমিয়ে দিয়ে শিক্ষার মানকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে না তো? এত মানুষ অবসাদে ভুগছেন। কিছু ঘটলে তার দায় নেবে কে?”
‘আমাদের আইনজীবীরা রিভিউ করবেন। যাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, তারা শিক্ষামন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছেন। আমি যদি সেখানে উপস্থিত থাকি, তাহলে তাঁরা খুশি হবে। আমি ৭ এপ্রিল ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাদের কাছে যাব। তাদের কথা শুনব। বলব, ধৈর্য হারাবেন না। মানসিক চাপ নেবেন না। চেষ্টা করব সমস্যার দ্রুত সমাধান করার।”