সত্যজিৎকে রায়কে ‘বোকা চিঠি’, আজও ‘মহারাজা’র প্রত্যাখ্যানপত্র সযত্নে রেখেছেন সুজয়

0

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: তিনি ‘মহারাজা’। তাঁর লেখা, আঁকা ছবি এবং গল্পকে ঘিরেই কেটেছে জীবন। সেই সত্যজিৎ রায়ের কাছেই আঁকা শেখার আবদার করে বসেছিলেন পরিচালক সুজয় ঘোষ। কিংবদন্তির কাছ থেকে উত্তর তো এসেছিল, তবে সম্মতির নয়।

শুক্রবার, ২ মে, সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন। এই দিনেই কিংবদন্তির স্বাক্ষর-সহ তাঁর প্রত্যাখ্যানপত্র তুলে ধরলেন ‘কাহানি’ খ্যাত পরিচালক।

তখন ১৯৮৯ সাল। ইংল্যান্ডে সদ্যই কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন সুজয়। না, কোনও মোটা টাকার চাকরি শুরুর কথা ভাবেননি তিনি। বরং চেয়েছিলেন কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের কাছে আঁকা শিখবেন। সেই মতো তাঁকে চিঠি লিখে বসেন তিনি। পরিচালকের কথায়, একেবারে ‘বোকা চিঠি’ ছিল সেটি। সত্যজিৎ রায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুজয়ের আবেদন। সেই প্রত্যাখ্যানপত্রই অমূল্য সম্পদ তাঁর কাছে। কারণ সঙ্গে পেয়েছিলেন পরিচালকের স্বাক্ষরও।

এ দিন সেই সবটাই সমাজমাধ্যমে তুলে ধরলেন সুজয়। চিঠির ছবিটি ভাগ করে নিয়ে তিনি লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর অনেকের মতো আমারও কোনও ধারণা ছিল না যে এর পর কী করব। শুধু জানতাম, ওঁর আঁকা, লেখা আর বলা গল্পগুলো আমি ভীষণ ভালবাসি। আমার কম্পিউটার সায়েন্স ডিগ্রির কথা ভাবিনি। সত্যজিৎ রায়কে একটি চিঠি বসলাম। সেখানে ওঁকে জানিয়েছিলাম যে আমি ওঁর যে কোনও কাজ করতে রাজি, শুধু যেন উনি আমায় আঁকা শেখান। একেবারে এলোমেলো আর বোকা একটা চিঠি। তবে উনি উত্তর দিয়েছিলেন।”

চিঠির জবাবে সত্যজিৎ রায় লিখেছিলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমার নিজের কোনও সংস্থা নেই যেখানে আপনাকে কাজের জন্য প্রস্তাব দিতে পারব। আমি নিজেই পারিশ্রমিকের বিনিময়ে প্রযোজকদের সঙ্গে কাজ করি। শুধু তাই নয় চিত্রনাট্য লেখা ও সম্পাদনার কাজ করি। তাই আপনাকে তেমন কোনও কাজের প্রস্তাব দিতে না পেরে দুঃখিত।’

এখনও সেই পত্র সযত্নে রেখে দিয়েছেন সুজয়। তিনি লেখেন, ‘আমি এখনও এই চিঠিটা পড়ি। আমার পাওয়া জীবনের প্রথম প্রত্যাখ্যানপত্র। কিন্তু সবথেকে যত্ন করে তুলে রাখা। সবথেকে বড় বিষয় হল তিনি তাঁর মূল্যবান সময় থেকে কিছুটা সময় বের করে এবং টাইপ করে আমার ম্যানচেস্টারে বসে লেখা এই বোকা চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন।’ আর তাতেই সত্যজিৎ যেন নায়ক হয়ে উঠেছিলেন সুজয়ের চোখে। তিনি লেখেন, ‘আজও তিনি আমার সিনেমার অন্যতম সেরা নায়ক এবং আমার একমাত্র শিক্ষক। শুভ জন্মদিন সত্যজিৎ রায়!’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *