রাজস্থানে বিস্ময় কিশোর বৈভবের আগুনে ইনিংস, ছাড়খাড় গুজরাট টাইটান্স

১৪ বছর ৩২ দিন বয়স। নেহাতই কিশোর। বৈভব সূর্যবংশী বিস্ময় জাগিয়ে এই বয়সেই খেলে ফেললেন এক দানবীয় ইনিংস। যে ইনিংসে ভর করে ২৫ বল বাকি থাকতেই লিগ টেবিলের তলানিতে চলে যাওয়া দল রাজস্থান রয়্যালস ৮ উইকেটে জয় পেল গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে। আগে ব্যাটিং করে শুভমন ও বাটলারের সৌজন্যে ৪ উইকেটে ২০৯ রান তুলেছিল গুজরাট। কে জানত, এক কিশোরের কামালেই হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে এত তাড়াতাড়ি! সোয়াই মান সিং স্টেডিয়ামে রাজস্থানের হয়ে গুজরাটের বিরুদ্ধে খেললেন ৩৮ বলে ১০১ রানের রেকর্ড ইনিংস। ভেঙে চুরমার যাবতীয় রেকর্ড। ১৪ বছরেই কামাল করে দেন বৈভব। ২০২৫ আইপিএলে ১৭ বলে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড করেন প্রথমে। এরপর প্রথম ভারতীয় হিসেবে ৩৫ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন তিনি। আইপিএলে দ্রুততম সেঞ্চুরিটি আছে ক্রিস গেইলের। ২০১৩ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৩০ বলে। তারপর এই এক যুগে গেইলের মতো বিস্ফোরক ইনিংসের কাছাকাছি কেউ যেতে পারেননি, যেটা আজ পারলেন কি না এক ১৪ বছর বয়সী! ১০১ রানের ইনিংসে সাজানো ছিল ৭ চার ও ১১ ছয়।

বৈভবের ইনিংসের স্ট্রাইকরেট ২৬৫.৭৮! বৈভব এখন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান। মণীশ পাণ্ডে ১৯ বছর ২৫৩ দিনের মাথায় আরসিবির হয়ে শতরান করেছিলেন ৭৩ বলে। ২০০৯ সালে সেঞ্চুরিয়নে ডেকান চার্জার্সের বিরুদ্ধে। সেটিই এতদিন অবধি ছিল আইপিএলে সবচেয়ে কম বয়সে করা কারও সেঞ্চুরি। ২০১৩ সালে সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফিতে ১৮ বছর ১১৮ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করা বিজয় জোলের রেকর্ডটি এখন বৈভবের।
বৈভবের দাপটেই গুজরাট টাইটান্সের ২০৯ রানের বিশাল ইনিংসও মনে হল সামান্য রান। শুভমন-বাটলারদের লড়াইয়ের পরও শীর্ষে ওঠার স্বপ্নভঙ্গ হল গুজরাটের। বৈভবের বিধ্বংসী ইনিংসের পাশে ম্লান মনে হলেও যোগ্য সঙ্গ দেন এদিন যশস্বী জয়সওয়াল। ৪০ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলে তিনি অপরাজিত থাকেন। তাতে রয়েছে ৯ চার ও ২ ছক্কা। বৈভবকে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা বোল্ড করলে নীতিশ রানা চার রানের বেশি করতে পারেননি। যশস্বীর সঙ্গে ম্যাচটা শেষ করেন অধিনায়ক রিয়ান পরাগ। ১৫ বলে ৩২ রান করে তিনি অপরাজিত ছিলেন। এই জয়ে ১০ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ৮ নম্বরে এল রাজস্থান রয়্যালস।

সোমবার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমেছিল গুজরাট টাইটান্স। শুভমন গিল আর জস বাটলারের ব্যাটে ভর করে ৪ উইকেটে ২০৯ তোলে তারা। জয়পুরে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে গুজরাট টাইটান্স। দুই ওপেনার শাই সুদর্শন আর শুভমন গিল ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে তুলে দেন ৫৩ রান। অবশেষে তাদের ৯৩ রানের মারকুটে জুটি ভাঙে ১০ ওভার পার করে। ৩০ বলে ৩৯ করে ফেরেন সুদর্শন। দারুণ ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন গিল। কিন্তু গুজরাট অধিনায়কের আশা পূরণ হয়নি, থামতে হয়েছে ৮৪ রানে। ৫০ বলের ইনিংসে ৫টি চার আর ৪টি ছক্কা হাঁকান গিল। এরপর ওয়াশিংটন সুন্দর ফিরে যান ৮ বলে ১৩ করেই। শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানো রাহুল তেওয়াটিয়ার ব্যাট থেকে আসে ৪ বলে ৯। ২৬ বলে ৩ চার আর ৪ ছক্কায় অর্ধশতরান পূরণ করে অপরাজিত থাকেন জস বাটলার। মাহিশ থিকসানা ৩৫ রানে নেন ২টি উইকেট।