হাতজোড় করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়ালের বৃদ্ধ বাবা

কী নিষ্ঠুর নিয়তি! বাবার জন্যই ভেবেছিলেন চাকরিটা এবার ছেড়েই দেবেন। মনস্থির করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু তা হল না। সময়ের হিসেব হল অন্যভাবে। সেই বাবার চোখের জল মুছে শেষকৃত্য করলেন অভিশপ্ত আহমেদাবাদ দুর্ঘটনায় মৃত পাইলট ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল। বাড়িতে এল ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়ালের কফিনবন্দি দেহাংশ। তা দেখেই পুত্রশোকে হাতজোড় করে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত সুমিতের ৮২ বছরের বাবা পুষ্করাজ সাভারওয়াল।

আমদাবাদে ভেঙে পড়া বিমানটির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডার। দু’জনের মিলিত উড়ান অভিজ্ঞতা ছিল ৯,৩০০ ঘণ্টারও বেশি। যেখানে ক্যাপ্টেন সুমিতের একারই, প্রায় ৮২০০ ঘণ্টা। শেষমুহূর্তে মে-ডে কল করেছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। শেষ বিদায়ের আগে বাড়িতে সুমিতের দেহ আসবে। তারজন্যই বাড়িতে আত্মীয়, পড়শিদের ভিড় ছিল। বৃদ্ধ বাবার দেখভাল করার জন্যই চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতেন সুমিত। তা আর হয়নি।

সুমিতের দেহ বাড়িতে আসতেই অশীতিপর বৃদ্ধ কফিনের সামনে আসেন। এরপর হাতজোড় করেন। কফিনেই যে ছেলের দেহ শোয়ানো আছে! কান্না চাপার চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু পারেননি। এই বয়সে এই শোকের কী আর সান্ত্বনা হবে, পড়শিরা কেউই যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এক আত্মীয় এদিনও জানান, বৃদ্ধ বাবাকে বাড়িতে রেখে কাজে গিয়েও বার বার ফোন করে খোঁজ রাখত সুমিত। দুর্ঘটনার আগেই বাবাকে বলেছিল, খুব তাড়াতাড়ি কাজ ছেড়ে দেব। তোমার দেখাশোনা করব। তা আর হল না। ভাগ্যের অদ্ভুত পরিহাস! ডিএনএ পরীক্ষার পর সুমিতের দেহ শনাক্ত করা হয়েছিল। তার পর মঙ্গলবার সকালে মুম্বইয়ে বাড়িতে পৌঁছয় পাইলট সুমিতের দেহ। মুম্বইয়ের পওয়াই এলাকার বাসিন্দা সুমিতের বাবা ছিলেন ডিজিসিএ-র প্রাক্তন অফিসার। দুই তুতোভাই বিমানচালক। ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল এয়ার ইন্ডিয়ার সবচেয়ে অভিজ্ঞ পাইলটদের একজন ছিলেন। অবসরের মাত্র কয়েক মাস বাকি ছিল।
