অপারেশন সিঁদুরের দুই কন্যা, জেনে নিন সোফিয়া কুরেশি ও ব্যোমিকা সিংয়ের বীরগাঁথা

0

ট্রেন্ডিং: পহেলগাঁও কাণ্ড। নিরীহ অনেকের সিঁথির সিঁদুর কেড়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা। ১৫ দিন পর প্রত্যাঘাত। অপারেশন সিঁদুর। ভারতের নিশানায় রক্তে ভাসল পাক অধিকৃত জঙ্গিঘাঁটিগুলি। মিশন সাকসেসের পর সেনা ব্রিফিং করতে এলেন ভারতের দুই বীরাঙ্গনা। চমকে উঠতে হয়, কারণ  এবারই প্রথমবার কোনো বড় সামরিক অভিযানের পর তথ্য জানাতে হাজির দুই সেনানায়িকা।  একজন, সাউথ ব্লক— লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোফিয়া কুরেশি, অন্যজন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। তাদের নিয়ে চর্চা নেটিজেনদের। তাদের পরিচয় নিয়েও বেড়েছে আগ্রহ। অপারেশনের পর এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

কে তিনি? সোফিয়া মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রির এক সেনাকর্তা মেজর তাজুদ্দিন কুরেশির স্ত্রী এবং তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে৷ নাম, সমীর কুরেশি। পরিচয় নামে নয়, কাজে। সোফিয়া প্রমাণ করলেন, জঙ্গিদের কোনও ধর্ম হয় না। তিনি নিজেই একজন ভারতীয় মুসলিম। তারজন্য তিনি গর্বিত। তাঁর কাজে দেশ গর্বিত। অপারেশন সিঁদুর-এর সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সাহসী মুখগুলোর মধ্যে একজন এই সোফিয়া কুরেশি। তিনি আসলে গুজরাটের বাসিন্দা। ১৯৮১ সালে গুজরাটের ভদোদরায় জন্ম।

বায়োকেমিস্ট্রিতে স্নাতকোত্তর। আর্মি পরিবারেই বড় হয়ে ওঠা। সোফিয়ার দাদাও সেনাবাহিনীতে ছিলেন, ঠাকুরদাও৷ তাঁর বাবাও কয়েক বছর ধরে সেনাবাহিনীতে একজন ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  ১৯৯৯  সালে সেনাবাহিনীতে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই কাজ করে চলেছেন সোফিয়া। কেরিয়ারের শুরুতে চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ। এরপর সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। ২০০৬ সালে, সোফিয়া কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা মিশনে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১০ সাল থেকে শান্তিরক্ষা অভিযানের সাথে যুক্ত। পঞ্জাব সীমান্তে অপারেশন পরাক্রমের সময় তাঁর অবদানের জন্য তিনি জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং-ইন-চিফ (জিওসি-ইন-সি) থেকে একটি প্রশংসাপত্রও পান। কিন্তু প্রথম লাইমলাইটে আসেন, ২০১৬ সালে। সে’সময় সোফিয়া ‘এক্সারসাইজ ফোর্স ১৮’-এ ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেন, যা ভারতের তরফে আয়োজিত ছিল বৃহত্তম বিদেশি সামরিক মহড়া। কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এই সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণকারী ১৮টি দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে একমাত্র মহিলা কমান্ডার ছিলেন।

ব্রিফিংয়ে সোফিয়ার সঙ্গী ছিলেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। ব্যোম শব্দের অর্থ মহাশূন্য। ব্যোমিকা নামের অর্থ আকাশকন্যা। ছোট থেকে আকাশে ওড়ার স্বপ্নই দেখে এসেছেন ব্যোমিকা। স্বপ্ন স্বার্থকও হয়েছে। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়ে যোগ দেন ভারতীয় বিমানবাহিনীতে। বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে ২০১৭ সালে উইং কমান্ডার হন। তাঁর পরিবারে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *