কর্নাটকে ‘ব্রাত্য’ সোনু? ‘৫১ বছর বয়স হল, অপমান সহ্য করব না’ বিতর্কের মাঝেই পাল্টা গায়কের
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: বেঙ্গালুরুর এক অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন। সেখানেই বিতর্কে জড়ান সোনু নিগম। দর্শক আসন থেকে কন্নড় গান গাইতে বলার ‘হুকুম’ ভেসে আসতেই মেজাজ হারান গায়ক। এখানেই শেষ নয়, সোনু ডেকে আনেন পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রসঙ্গও। তারপরেই বিতর্ক। তাঁর বিরুদ্ধে নোটিসও জারি হয়েছে অবলাহল্লি থানায়। গায়ককে নাকি হাজিরাও দিতে হবে এক সপ্তাহের মধ্যে। বিতর্ক বাড়তেই সমাজমাধ্যমে মুখ খুললেন খোদ সোনু। ঠিক কী ঘটেছিল সে দিন?

সোনু হিন্দি গান গাইছিলেন মঞ্চে। এমন সময়ে শ্রোতামহল থেকে ভেসে আসে কন্নড় গান গাওয়ার আবদার। যা একেবারেই ভাল লাগেনি সঙ্গীতশিল্পীর। তিনি বলেছিলেন, “ছেলেটির যা বয়স, তার চেয়ে বেশি দিন ধরে আমি কন্নড় গান গাইছি। কিন্তু এই ছেলেটি অত্যন্ত রূঢ় ভাবে আমাকে হুমকি দিচ্ছে ‘কন্নড়, কন্নড়’ বলে। এই সব কারণের জন্যেই পহেলগাঁওয়ের মতো ঘটনা ঘটে যায়।”
এর পরেই সোনুর বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর। অভিযোগ ছিল, ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে তিনি শত্রুতা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। বিতর্কের মাঝেই সমাজমাধ্যমে খোলা চিঠি লিখলেন গায়ক। লেখেন, ‘ শুধু কর্নাটকে থাকাকালীন নয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকি না কেন, কর্নাটকের প্রতি অগাধ ভালবাসা প্রকাশ করেছি। কন্নড় ভাষা, কর্নাটকের সংস্কৃতি, সঙ্গীতশিল্পী, ওই রাজ্য এবং সেখনকার লোকজনের প্রতি আমার ভালবাসা আছে।’ তাঁর কথায়, হিন্দি-সহ অন্যান্য ভাষার গানের তুলনায় কন্নড় ভাষার গানকে তিনি অনেক বেশি শ্রদ্ধা করেন।

তার পরেই সোনু লেখেন, ‘কারও থেকে অপমান সহ্য করার মতো বাচ্চা ছেলে আমি নয়। আমার বয়স ৫১ বছর। জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছি। সেখানে আমার ছেলের বয়সী একজন আমায় সরাসরি হুমকি দিচ্ছে, তাও আবার হাজার হাজার লোকের সামনে, সেটাও আবার কন্নড় ভাষা নিয়ে যা আমার কাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ভাষা এবং সেটাও কনসার্টে মাত্র একটা গান গাওয়ার পরেই। আরও কয়েকজনকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টাও করছিল ও। ওদের নিজেদের লোকেরাই বিব্রত হয়ে পড়ছিল, ওকে চুপ করতে বলছিল। আমি সকলকে খুব বিনয়ের সঙ্গে ভালভাবে বলেছিলাম যে শো সবে শুরু হয়েছে। এটা আমার প্রথম গান। আমি আপনাদের হতাশ করব না। শুধু আমাকে আমার প্ল্যানমাফিক অনুষ্ঠানটা করতে দিন। সব শিল্পীরই একটা পরিকল্পনা তৈরি থাকে। গানের তালিকা থাকে, যাতে মিউজিশিয়ান, টেকনিশিয়ান সকলে একত্রিত হতে পারেন। কিন্তু ওরা গন্ডগোল করছিল, ক্রমাগত ভয় দেখাচ্ছিল আমায়। তাহলে দোষটা কার?’
তিনি আরও লেখেন, ‘একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে, যারা ভাষা, জাতি, ধর্মের নামে হিংসা তৈরির চেষ্টা করে, বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর, তাদের আমি ঘৃণা করি। আমি দোষী কি না, তা বোঝার দায়িত্ব আমি কর্নাটকের বিবেচক জনগণের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি।’