বড়বাজার ফেরাল স্টিফেন কোর্টের স্মৃতি, মেছুয়ার হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
ট্রেন্ডিং: বড়বাজারের মেছুয়া ফলপট্টির হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ফেরাল স্টিফেন কোর্টের স্মৃতি। ভয়াবহ আগুনে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধেয় ঋতুরাজ হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের পরই আনন্দ পাসোয়ান নামে একজন ঠিক স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের মতোই আগুন থেকে নিজেকে বাঁচাতে উপর থেকে ঝাঁপ দেন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। হোটেলের রুম থেকে পরে আরও ১৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। দমবন্ধ হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪। এদের মধ্যে ২ জন শিশু, একজন মহিলা এবং ১১ জন পুরুষ। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁরা হোটেলের প্রথম তলায় আগুন দেখতে পান। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে ছ’তলা হোটেলের অন্যান্য ফ্লোরে।

আচমকা আগুনে হোটেলের ভিতরে আটকে পড়েন বহু আবাসিক। প্রবল ধোঁয়ার জেরে ‘গ্যাসচেম্বার’-এর পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রবল ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টেই মৃত্যু হয় বেশিরভাগের। জানা যাচ্ছে ৪৪টি রুমে মোট ৮৮ জন পর্যটক ছিলেন। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগ ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় জগন্নাথদেব মন্দিরের উদ্বোধনে থাকলেও সর্বক্ষণ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ওই হোটেলে দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে তিনি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

কলকাতা এর আগেও সাক্ষী থেকেছে এ’রকমই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের। ২০১০ সালে পার্ক স্ট্রিটে স্টিফেন কোর্ট স্মৃতি এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। স্টিফেন কোর্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছিল ৪৩ জনের। তার দেড় বছরের মাথায় ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছিল ৯৩ জনের। তারও আগে ২০০৮ সালের ১২ জানুয়ারি এই বড়বাজারের নন্দরাম মার্কেটেই বিধ্বংসী আগুন লাগে। ভয়াবহ সেই আগুনে ছাই হয়ে যায় হাজারেরও বেশি দোকান। একইরকমভাবে ১০ বছর পর ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বাগরি মার্কেটের ৬ তলা বাড়িতে বিধ্বংসী আগুন লাগে। ২০২১ সালের ৮ মার্চ স্ট্র্যান্ড রোডে নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ে আগুন লাগে। ২টি লিফটে আটকে ঝলসে মৃত্যু হয় ৯ জনের।