বেঙ্গালুরুতে মর্মান্তিক দুঘর্টনার দায় কার, রাজ্য সরকার না ফ্র্যাঞ্চাইজির?
স্পোর্টস ডেস্ক: আইপিএলের বিজয়োৎসবে শামিল হতে গিয়েই ১১ জন পদপিষ্ট। দায় কার? রাজ্য সরকার না ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের? দায় ঠেলাঠেলি শুরু দু’পক্ষের। ১৮ বছরের আইপিএল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রফি জিতেছে বিরাট কোহলির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। বিরাটদের অভিনন্দন জানাতে লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে। একদিকে প্রবল বৃষ্টি, অন্যদিকে ছিল ভিড় সামলাতে পুলিশের লাঠিচার্জ। সেখানেই দুর্ঘটনা। জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে ৩ জনের বয়স উনিশের কম। ৬ জনের বয়স ২০-৩০ বছরের মধ্যে। দুজনের বয়স তিরিশের বেশি।
মৃতদের মধ্যে একজন ১৩ বছরের নাবালিকাও রয়েছে। সরকারের দাবি, বিনামূল্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়াটাই কাল হয়েছে। কারণ, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দর্শকাসন ৩৩ হাজার, অথচ হাজির হয়েছিলেন তিন থেকে চার লাখ মানুষ। একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, পুরো সেলিব্রেশনের পরিকল্পনা করা হয় একেবারে শেষ মুহূর্তে। বুধবার গোটা সেলিব্রেশনের অনুষ্ঠানেই নাকি আপত্তি ছিল বেঙ্গালুরু পুলিশের। পুলিশ চেয়েছিল পিছিয়ে রবিবার হোক এই উৎসব। কিন্তু সেই আপত্তি শোনেনি আরসিবি। তাই চাপে পড়েই বাধ্য হয় পুলিশ অনুমতি দিতে। অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের দাবি, আরসিবি শুরুতে সেলিব্রেশন করতে চেয়েছিল কর্নাটকের বিধান সৌধের সামনে। কিন্তু আইনসভার মতো স্পর্শকাতর জায়গায় সেটার অনুমতি পুলিশ দিতে চায়নি। পরে আরসিবি ঠিক করে বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সেখান থেকে চিন্নাস্বামী পর্যন্ত হুডখোলা গাড়িতে রোড শো করে যাবেন বিরাটরা। ওই অনুষ্ঠানেও তাঁরা অনুমতি দিতে চায়নি পুলিশ। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তাদের একপ্রকার জোরাজুরিতে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সেলিব্রেশন করা হবে ঠিক হয়। বাতিল হয় রোড শো। প্রশাসনের দাবি, বিনামূল্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়াটাই কাল হয়েছে। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠান আরসিবির নিজস্ব অনুষ্ঠান। এতে বিসিসিআইয়ের দায় নেই। সংগঠকদের আরও ভালো করে পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। এর আগে কলকাতা ও মুম্বইয়ে লোক হলেও এইরকম ঘটনা ঘটেনি’।
বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা বলেছেন, ‘কর্নাটক সরকার আগেই প্রস্তাবিত রোড শো বাতিল করেছিল। কিন্তু স্টেডিয়ামের বাইরে যে এমনটা হতে পারে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আরসিবিও ভাবতে পারেনি এত মানুষ আসবেন। তাই এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়’। কর্নাটক সরকার পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় যে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সেই তদন্তের আওতায় রয়েছে আরসিবিও। কারণ, তারাই বিজয় মিছিলের কথা জানিয়ে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছিল। পরে তা ডিলিট করা হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেবে তারা। পাশাপাশি, আহত সমর্থকদের চিকিৎসার জন্য আরসিবি কেয়ার নামে একটি বিশেষ তহবিলও গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৃতদের পরিবারগুলিকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।