অটো কিংবা সাইকেলেই যেতেন অনুশীলনে, বরাদ্দ ছিল ৩০ টাকা, জীবনটাই যেন বদলে গেল অশ্বনি কুমারের

0

জীবনের জার্নিটাই যেন রোলার কোস্টার। মুম্বইয়ের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই নায়ক বনে যাওয়া বছর তেইশের অশ্বনি কুমার এমনটা বলতেই পারেন। যার হাতে তাবড় নাইট ব্যাটারদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। ভাগ্য থাকলে, এই অশ্বনি কুমারকে বল হাতে ছুটতে দেখা যেত নাইটদের হয়েই। কিন্তু তা হয়নি। কলকাতা নাইট রাইডার্সে ট্রায়াল দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে শেষপর্যন্ত দলে নিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সই। আর জীবনের প্রথম আইপিএল ম্যাচেই অজিঙ্কা রাহানে, রিঙ্কু সিং, মণীশ পাণ্ডে, আন্দ্রে রাসেলদের ড্রেসিংরুমেই রাস্তা দেখিয়েছেন।তাতে পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও। এই অশ্বনি কুমারকে নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে আইপিএলে। আসলে পঞ্জাবের মোহালির ঝাঞ্জেরি গ্রামের এই তরুণ ক্রিকেটার ক’দিন আগেও ছিলেন অচেনা। আইপিএলে অভিষেকে রেকর্ড গড়ে চলে এসেছেন পাদপ্রদীপের আলোয়। এই প্রথম কোনও ভারতীয় বোলার আইপিএলের অভিষেকেই চার উইকেট পেয়েছেন। ম্যাচ শেষে তাঁর মুখে হাসি ফুটলেও, এই হাসি এতদিন ছিল না। অন্তত মুম্বই দলে সুযোগের আগে পর্যন্ত। তাঁর বাবা হরকেশ সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বৃষ্টি অথবা প্রখর রোদ, আবহাওয়া যেমনই হোক অশ্বনি কখনো মোহালির পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (পিসিএ) স্টেডিয়ামে অথবা মুল্লানপুরের নতুন স্টেডিয়ামে যাওয়া বাদ দিত না। মাঝেমধ্যে সে সাইকেলে অথবা শেয়ার্ড অটোতে পিসিএ একাডেমিতে যেত।’ আর এই ১১ কিলোমিটার দূরত্বের প্র্যাকটিসে যেতে তাঁর বরাদ্দ ছিল বাড়ির থেকে মাত্র ৩০ টাকা। তাঁর বাবা আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সে যখন ৩০ টাকা ভাড়া চাইত, তখন বুঝতে পারিনি তার প্রতিভার মূল্য কত।

কিন্তু যখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাকে নিলামে ৩০ লাখ টাকায় দলে নেয়, তখন বুঝলাম, সে সত্যিই প্রতিটি পয়সার যোগ্য’। বন্ধুরাই চাঁদা তুলে কিনে দেয় স্পাইক, বল। অশ্বনিও মুম্বইয়ের থেকে টাকা পাওয়ার পর গ্রামের একাডেমিতে বল আর কিটস কিনে দিয়েছেন। হরকেশ বলেন, ‘অশ্বনীকে একেকটি উইকেট নিতে দেখে মনে পড়ছিল রাত ১০টায় ফিরে ফের ভোর পাঁচটায় তাঁর অনুশীলনে যাওয়ার দিনগুলির কথা।’ আইপিএল অভিষেকের আগে স্বীকৃত ক্রিকেটে সর্বসাকল্যে ১০ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল অশ্বনির। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২ ম্যাচ, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪ ম্যাচ ও স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর আইপিএলে অভিষেক ঘটে। পঞ্জাব, রাজস্থান থেকে কলকাতা সব জায়গাতেই ট্রায়াল দিয়ে গেছেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত মুম্বই দলে নিয়েছে ৩০ লাখ টাকায়। তার আগে অশ্বনির সম্বল বলতে ছিল শুধু বাবার দেড় একর জমি। এখন ২২ গজের জমিটাই শক্ত করার লড়াই অশ্বনির।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *